যে সমস্ত ব্যক্তিরা সরকারি চাকরি করেন তাদের একটা নিশ্চয়তা থাকে যে চাকরি জীবন শেষ হওয়ার পরেও জীবনের শেষ সময়টা ঘরে বসেই পেনশনের টাকা পেয়ে অনায়াসে দিন যাপন করা যাবে। কিন্তু সমস্ত ব্যক্তি তো সরকারি চাকরির সঙ্গে যুক্ত থাকে না, বেশিরভাগ মানুষ বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে যুক্ত থাকেন। সে সমস্ত ব্যক্তিদের চাকরির জীবন শেষ হওয়ার পরে অবসর গ্রহণ করার পর যদি কোন পেনশন নামক সুবিধা না থাকে তাহলে তাদের অবসরের জীবনকে কিভাবে চলবে এটা ভেবেই অনেকে চিন্তায় থাকেন। কিন্তু বর্তমানে বেসরকারি চাকরি করলেও পেনশন পেয়ে থাকেন চাকরিজীবীরা।
কিন্তু এক্ষেত্রে কিছু শর্ত রয়েছে। আপনি কি কোন বেসরকারি সংস্থায় কাজ করেন এবং সেখানে যদি আপনি এক নাগাড়ে ১০ বছর না কাজ করেন, তাহলে পেনশনের সুবিধা আপনি পাবেন না। অর্থাৎ যে কোন বেসরকারি সংস্থায়ী কর্মচারীকে অন্তত ১০ বছর কাজ করতে হবে। জমা হওয়ার টাকা ব্যবহার করে এই মাসিক পেনশন দেওয়া হয় কর্মচারীদের। এই সমস্ত বিষয়টি পর্যালোচনা করে থাকেন এমপ্লয়িড প্রভিডেন্ট ফান্ড অর্গানাইজেশন। বেসরকারি সমস্ত কর্মরত ব্যক্তিদের কাছে এই প্রভিডেন্ট ফান্ড হলো একটা আশার আলোর মতন। বেসরকারি সংস্থার কাজ করেও সরকারি চাকরিজীবীদের মতো পেনশনের মতন একটি আশার দিশা দেখায় এই প্রভিডেন্ট ফান্ড।
দেখে নাও যাক, একজন ব্যক্তি ৩০ বছর যদি কোন সংস্থার কাজ করে তাহলে তিনি কত টাকা পেনশন পাবেন:-
অনেক বেসরকারি কর্মচারী ভেবে থাকেন তাদের পেনশন ক্যালকুলেটর সরকারি কর্মজীবীদের থেকে অনেকটা আলাদা। বেসরকারি খাতে কাজ করা যেসব কর্মী কর্মচারী ভবিষ্যনিধি (EPF) স্কিমে যুক্ত, তারা কর্মচারী পেনশন স্কিম (EPS)–এর আওতায় পেনশনের সুবিধা পান। এই স্কিনে প্রত্যেক মাসে একজন কর্মচারীর বেতনের একটি অংশ স্বয়ংক্রিয়ভাবে প্রভিডেন্ট ফান্ড একাউন্টে জমা হয়। এবং নিয়োগকর্তাও সমপরিমাণ অর্থ জমা করেন। বিশেষভাবে, নিয়োগকর্তা কর্মচারীর বেসিক বেতন ও মহার্ঘ ভাতা (DA)–এর ৮.৩৩% EPS–এ জমা করেন, তবে এর সর্বোচ্চ সীমা ১৫,০০০ টাকা বেতন পর্যন্ত নির্ধারিত। অবসর গ্রহণের সময়, EPS অ্যাকাউন্টে জমা হওয়া পরিমাণ ব্যবহার করে মাসিক পেনশন প্রদান করা হয়, যা পরিচালনা করে কর্মচারী ভবিষ্যনিধি সংস্থা।
আরোও পড়ুন:- মহারাষ্ট্র পুলিশ ভারতী ২০২৫ বিপুল সংখ্যক শূন্যপদে নিয়োগ, জানুন অনলাইনে আবেদন সংক্রান্ত তথ্য।
পেনশন গ্রহনের ন্যূনতম বয়স নির্ধারণ করা হয়েছে ৫৮ বছর, এবং এর জন্য একজন কর্মচারীকে ন্যূনতম ১০ বছর চাকরি করতে হবে। তবে একজন কর্মচারী চাইলে ৫০ বছর বয়সেও কম পরিমাণে পেনশন গ্রহণ করতে পারেন তবে 50 বছর বয়সে তার কর্ম ক্ষেত্রে ১০ বছর পূর্ণ হতে হবে। কিন্তু একজন কর্মচারী যদি ১০ বছর পূর্ণ হওয়ার আগে চাকরি ত্যাগ করেন তাহলে তিনি কোন রকম পেনশন পাবেন না। তবে অবসরের সময় পুরো EPS পরিমাণ এককালীন হিসেবে প্রদান করা হবে।
৩০ বছর চাকরি করলে কত পেনশন হবে?
শেষ ৬০ মাসের গড় বেসিক বেতনকে মোট চাকরির বছর দ্বারা গুণ করা হয় এবং তারপর ৭০ দ্বারা ভাগ করা হয়।অতএব, যদি উদাহরণ দিয়ে বোঝানো যায়, যদি কোন কর্মচারী পেনশন যজ্ঞ বেতন ২৫ হাজার টাকা হয় এবং তা 30 বছর কাজে অভিজ্ঞতা থাকে তাদের মাসিক টেনশন হবে ১৫,০০০ × ৩০ – ৬,৪২৮ টাকা প্রতি মাসে।
যদি ৩০ বছর কাজ করার পর কোন কর্মচারীর মৃত্যু হয় তাহলে তার পেনশন কি হবে?
যদি ৩০ বছর কাজ করার পর কোন কর্মচারীর মৃত্যু হয় তাহলে তার পেনশন তার পরিবারের স্ত্রী বা ছেলেমেয়ে পেতে পারে। EPFO–র নিয়ম অনুযায়ী, পরিবার বা মনোনীত ব্যক্তি ফর্ম ১০ডি বা কম্পোজিট ক্লেইম ফর্ম শেষ নিয়োগকর্তার মাধ্যমে পূরণ করে সমস্ত প্রয়োজনীয় দলিল EPFO অফিসে জমা দিয়ে পেনশনের দাবি জানাতে পারেন।
অর্থাৎ একজন ব্যক্তি যদি বেসরকারি সংস্থা কাজ করেন তাহলে তার পেনশন নিয়ে কোনো রকম চিন্তাভাবনা করার ব্যাপার নেই। একজন সরকারি চাকরিজীবীর মতন তিনিও পেনশন পাবেন তারা অবসর জীবনে।
